কুশলাদি জিজ্ঞেসের পর ঈদের কথা তুলতেই ডুকরে কেঁদে উঠলেন কল্পনা আক্তার। নিজেকে কিছুটা সামলে নিয়ে বলতে লাগলেন সেদিনকার ভয়াল মুহূর্তের
সব কথা। সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলার স্বরস্বতীপুর গ্রামের কাছুম আলীর
স্ত্রী কল্পনা আক্তার। অন্যদের সাথে সেদিন
তারাবি নামাজ পড়ছিলেন কল্পনা আক্তারের ছেলে হযরত আলী। গ্রামেরই একটি চালা ঘরের পাঞ্জেখানায় (নামাজ পড়ার অস্থায়ী ঘর) তারা নামাজ পড়ছিলেন। ঘড়টির বেড়া ছিল না। নামাজ পড়া শেষের দিকে। হঠাৎ বজ্রপাতে পাঞ্জেখানায় নামাজ পড়ুয়া ১৩জনের সাথে হযরত আলীও মারা যান। কথা বলতে যেয়ে ছেলেহারা মায়ের গলা ধরে আসছিল। কি ভাবে আমরা
তাদের
ছেড়ে ঈদ করবো, বলেই কাদতে থাকেন। যোগ দেন হযরত আলীর বাবা কাছুম আলী। দীর্ঘশ্বাস ফেলেবলেন,ওদের (বজ্রপাতে নিহতদের) কবর জিয়ারত করেই ঈদের দিনটা কাটাবো। বজ্রপাতে নিহত আবু তাহেরের স্ত্রী নূরজাহান বলেন, স্বামীকে হারিয়ে দিশা পাচ্ছিনা। এখনো তিনি বিশ্বাস করতে পারছেন না তার স্বামী মারা গেছেন। তিনি শুধুই স্বামীর স্মৃতির কথা বলছিলেন আর কাদছিলেন। এ সময় ছেলে রেন্টু, রেজু,পরান, সাজন ও শাহনূর তাদের মাকে শান্তনা দেয়ার ব্যর্থ চেষ্টা করছিল। একই সাথে মারা যান মানিক মিয়া। তার স্ত্রী রেহেনা আক্তার। হিরন, জাহাঙ্গীরসহ পাঁচ ছেলে তার। ঈদ যেন রেহেনার কাছে হয়ে উঠেছে স্মৃতি রোমন্থনের দিন। তিনি জানালেন, সেমাই রান্না করবেন, সন্তানদের দিকে চেয়ে। ছেলেদের দুঃখ কমাতেই তিনি সেমাই রান্না করছেন। মারা যান গফুর মিয়া ও ছেলে মজলুমিন। গফুর মিয়ার আরেক ছেলে সেলিম জানান, কবর জিয়ারতই এবার তাদের কাছে ঈদ উদযাপন। একই ধরনের কথা জানান, নিহত ছালামের স্ত্রী কাচু বিবি, নূর ইসলামের স্ত্রী মজিদা আক্তার, নূরুল ইসলামের স্ত্রী ৬ সন্তানের জননী জরিনা বেগম, ছেলেহারা বাবা আলী উছমান, নিহত বাদশা মিয়ার বাবা মোফাজ্জল মিয়া। ছেলে রিপনকে হারিয়ে মা আনোয়ারা বেগম বাকরুদ্ধ। কথা বলতে চেয়েও বলতে পারেননি। কান্না সামলানোর চেষ্টা করেও পারেননি। শুধু বললেন, আমাদের ঈদ নেই।
স্বরস্বতীপুর গ্রামের বাসিন্দা ইউপি সদস্য আবুল কালাম জানান, গ্রামের জামে মসজিদে ঈদের নামাজ অনুষ্টিত হবে। এ সময় নিহতদের জন্যে দোয়া করা হবে। গ্রামে শোকের পরিবেশ বিরাজ করছে। আড়াই শতাধিক পরিবারের এই গ্রামের মানুষের মন ভালো নেই।
ছেড়ে ঈদ করবো, বলেই কাদতে থাকেন। যোগ দেন হযরত আলীর বাবা কাছুম আলী। দীর্ঘশ্বাস ফেলেবলেন,ওদের (বজ্রপাতে নিহতদের) কবর জিয়ারত করেই ঈদের দিনটা কাটাবো। বজ্রপাতে নিহত আবু তাহেরের স্ত্রী নূরজাহান বলেন, স্বামীকে হারিয়ে দিশা পাচ্ছিনা। এখনো তিনি বিশ্বাস করতে পারছেন না তার স্বামী মারা গেছেন। তিনি শুধুই স্বামীর স্মৃতির কথা বলছিলেন আর কাদছিলেন। এ সময় ছেলে রেন্টু, রেজু,পরান, সাজন ও শাহনূর তাদের মাকে শান্তনা দেয়ার ব্যর্থ চেষ্টা করছিল। একই সাথে মারা যান মানিক মিয়া। তার স্ত্রী রেহেনা আক্তার। হিরন, জাহাঙ্গীরসহ পাঁচ ছেলে তার। ঈদ যেন রেহেনার কাছে হয়ে উঠেছে স্মৃতি রোমন্থনের দিন। তিনি জানালেন, সেমাই রান্না করবেন, সন্তানদের দিকে চেয়ে। ছেলেদের দুঃখ কমাতেই তিনি সেমাই রান্না করছেন। মারা যান গফুর মিয়া ও ছেলে মজলুমিন। গফুর মিয়ার আরেক ছেলে সেলিম জানান, কবর জিয়ারতই এবার তাদের কাছে ঈদ উদযাপন। একই ধরনের কথা জানান, নিহত ছালামের স্ত্রী কাচু বিবি, নূর ইসলামের স্ত্রী মজিদা আক্তার, নূরুল ইসলামের স্ত্রী ৬ সন্তানের জননী জরিনা বেগম, ছেলেহারা বাবা আলী উছমান, নিহত বাদশা মিয়ার বাবা মোফাজ্জল মিয়া। ছেলে রিপনকে হারিয়ে মা আনোয়ারা বেগম বাকরুদ্ধ। কথা বলতে চেয়েও বলতে পারেননি। কান্না সামলানোর চেষ্টা করেও পারেননি। শুধু বললেন, আমাদের ঈদ নেই।
স্বরস্বতীপুর গ্রামের বাসিন্দা ইউপি সদস্য আবুল কালাম জানান, গ্রামের জামে মসজিদে ঈদের নামাজ অনুষ্টিত হবে। এ সময় নিহতদের জন্যে দোয়া করা হবে। গ্রামে শোকের পরিবেশ বিরাজ করছে। আড়াই শতাধিক পরিবারের এই গ্রামের মানুষের মন ভালো নেই।
ধর্মপাশা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বায়েছ আলম জানান, সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলার জয়শ্রী ইউনিয়নের স্বরস্বতীপুর
গ্রামে ১০ আগষ্ট শুক্রবার রাতে একটি পাঞ্জেখানায় ( নামাজ পড়ার অস্থায়ী ঘর) তারাবির
নামাজরত অবস্থায় বজ্রপাতে ইমাম সাহাবউদ্দিন
ও পিতা পূত্রসহ ১৩ জন মুসুল্লী নিহত ও ১৫ জন গুরুতর আহত হন।
নিহতরা হচ্ছেন , রিপন (১৮), নজরুল ইসলাম (৪০), নূরুল ইসলাম (৬০), হযরত আলী (৩০), মজলুমিন (৩০), গফুর মিয়া (৭৫), বাদশাহ মিয়া (১৮), আবু তাহের (৬৫), মানিক (৪৫),
ছালাম মিয়া (৫০), নূর ইসলাম (৬৫), আনোয়ার হোসেন (১৮), ও ইমাম সাহাব উদ্দিন (৬০)। নিহত ইমাম সাহাবউদ্দিনের বাড়ী উপজেলার বানারশিদপুর গ্রামে ও নিহত নজরুল ইসলামের
বাড়ী উপজেলার মোজাফ্ফরপুর গ্রামে এবং বাকী ১১জনের বাড়ী স্বরস্বতীপুর গ্রামে।পরদিন দুপুর একটায়
স্বরস্বতীপুর মাদ্রাসা প্রাঙ্গনে নিহতদের নামাজে জানাজা শেষে তাদের পারিবারিক কবরস্থানে
দাফন করা হয়। এ ঘঠনায় আহতদের ধর্মপাশা
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে গুরুতর ৬ জনকে ভর্তি করে বাকীদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। গুরুতর আহতরা হচ্ছেন, জিয়াউর রহমান (৩২) জয়নাল আবেদীন খান (৬২), রুপ চান (২৫) নয়ন মিয়া
(৩৫), সফিক মিয়া (২৬) আবুশেমা (১৬)। তাদের প্রত্যেকের বাড়ী স্বরস্বতীপুর গ্রামে।
প্রতিবেদন : লাভলু পাল চৌধুরী
No comments:
Post a Comment