Thursday, August 30, 2012

শাহ সুলতান কমর উদ্দিন রুমীর মাজার শরীফ

undefinedশাহ সুলতান কমর উদ্দিন রুমী (জন্ম :?- মৃত্যু ১০৫৩ খ্রীঃ) নেত্রকোণা সদর উপজেলার মদনপুর নামক স্থানে শাহ সুলতান কমর উদ্দিন রুমীর সমাধি রয়েছে১০৫৩ খ্রীস্টাব্দের কিছু পূর্বে পশ্চিম এশিয়ার তুরস্কের সেলজুক রাজ্য থেকে সুফী সাধক শাহ সুলতান কমর উদ্দিন রুমী (রহঃ)- আগমন বলে কথিত আছেআরো কথিত আছে রোম সম্রাজ্য বিজয়ী তুরস্ক রাজ্যকেই রোম সম্রাজ্য বলা হতেএর শাসককে বলা হতো রুমীএবং সে রাজ্যের সুলতানের ছোট ভাই হিসেবে শাহ সুলতানও রুমী উপাধিতে অভিহিত করা হতো ১২০ জন সুফী সাধাকের একটি
দল নিয়ে প্রথমে বর্তমান বাংলাদেশের সমুদ্র উপকূল চট্টগ্রাম অঞ্চলে তিনি আসেনসেখান থেকে পণ্ড্রয়ার রাজধানী মহাস্থান গড় (বগুড়া) অভিমুখে ধর্ম প্রচার্থে যাত্রা করেন
ইতোপূর্বেই ১২০জনের সুফীদলের একাংশ নিয়ে শাহ্ সুলতান সৈয়দ মাহমুদ মাহী সাওয়ার বল্কী মহাস্থানে পৌঁছে সেখানকার শাসক পরশুরাম কে ইসলামের দাওয়াত দেনএতে পরশুরাম ক্ষিপ্ত হয়ে শাহ্ সুলতান সৈয়দ মাহমুদ মাহী সাওয়ার বল্কীর দলকে আক্রমন করেনসে আক্রমনে শাহ্ সুলতান সৈয়দ মাহমুদ মাহী সাওয়ারসহ (সাত) জন শহীদ হনশাহ্ সুলতান সৈয়দ মাহমুদ মাহী সাওয়ার এর শহীদ হওয়ার সংবাদে শাহ সুলতান কমর উদ্দিন রুমী তাঁর কায়কাউয়ার নামক সুফীদের সংঘবদ্ধ দলকে নিয়ে মহাস্থানে গমন করেনতিনি সরাসরি পরশুরামের বিরুদ্ধে যুদ্ধে লিপ্ত না হয়ে আল্লাহর একাত্মবাদ তার প্রেরীত পুরুষ হযরত মোহাম্মদ (দঃ) কে মেনে ইসলাম ধর্ম গ্রহনের প্রস্তাব দেন প্রস্তাবে পরশুরাম পুনরায় ক্ষিপ্ত হলে শাহ সুলতান কমর উদ্দিন রুমী তাঁকে আক্রমন করেনএতে পরশুরাম নিহত হয়েছিলপরশুরামকে পরাস্থ করে শাহ সুলতান কমর উদ্দিন রুমী বরেন্দ্র ভূমি হস্তগত করে ইসলাম প্রচার শুরু করেন
সেখান থেকে পূর্বদিকে যমুনানদী পাড়ি দিয়ে দুর্মুট নামক স্থানে গমন করেন (স্থানটি বর্তমান জামালপুর জেলাধীন)এবং সেখানে আস্তানা স্থাপন করেনসেখান থেকে ব্রহ্মপুত্র নদী অতিক্রম করে বোকাই কোচের রাজ্য বোকাইনগর গমন করেনসেখানে বোকাই কোচকে ইসলাম ধর্মে দীক্ষাদেনপরে বোকাইনগরের পূর্বদিকে মদন কোচের রাজ্য মদনপুরে যানমদন কোচকে তিনি বুদ্ধি বলে পরাস্থ করে মদনপুরে ইসলাম ধর্ম প্রচারকার্য শুরু করেন
১০৮৫ হিজরীতে সম্রাট শাহ জাহানের পুত্র বাংলার সুবেদার শাহ্ সুজা হযরত শাহ সুলতান কমর উদ্দিন রুমীর মাজারের অনুকূলে এক সনদ প্রদান করেছিলেনযার ফার্সী ভাষা থেকে বঙ্গানুবাদ এরুপ- “শাহ সুলাতান রুমী এবং শাহ সৈয়দ সুর্খুল চল্লিশ আউলিয়া পরগনা মৈমনসিংহ, জায়গীরদার সৈয়দ জালাল উদ্দিন মোহাম্মদ এবং বিচার বিভাগের শাসনকর্তা দস্তগাহ কাজী লুফুল্লাহ এবং উক্ত পরগনার হুকুমত পানাহা মোহাম্মদ আলী বেগ প্রমুখ সকলের মোহরযুক্ত মতে এবং অন্যান্য কর্মচারীগণের দস্তখতসহ অদ্য ১০৮৫ হিজরী সালে জিলকায়দ মাসে অত্র হুকুমত নামা দ্বারা স্বীকার করা হল সে পরগনা মৈমনসিংহের বাজুহাই সরকার জায়গীরদার ছিয়াছত এবং নেজারত পানাহা সৈয়দ জালাল উদ্দিন মোহাম্মদ কর্তৃক লাখেরাজ প্রদত্ত সোনারগাঁও সরকারের অধীন মদনপুর মৌজায় হযরত শাহ সুলতান সাহেব ৪৪৫ হিজরীতে চল্লিশ জন দানেশ মান্দ মারেফাত তত্ত্বজ্ঞানীসহ আগমন করেনএই সময় মদনা নামে রাজা ওই স্থানে রাজত্ব করতেনউক্ত রাজা মৃত্যু মুখে পতিত হন এবং অন্যান্য পৌত্তলিক কাফেরগণ ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেনউক্ত হযরত শাহ্ সুলতান মদনপুর মৌজায় সঙ্গীগণসহ অবস্থান করেন এবং জামেউল উলুম পরিচালনা করেনএই মৌজায় সমস্ত আউলিয়াগণের মাজার অবস্থিতএই মৌজার দরগা শরীফের খাদেমগণ বাস করিতেনএই মৌজা সর্বপ্রকার জমা অর্থা খাজনা হইতে বর্হিভূত

লিখেছেন   : আলী আহাম্মদ খান আইয়োব

No comments:

Post a Comment